খুলনার গ্রামাঞ্চলেও করোনা ছড়াচ্ছে, বহিরাগতরা নজরদারিতে
- আপডেট সময় : ০৫:০৩:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুন ২০২০ ৩৫ বার পড়া হয়েছে
খুলনার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলেও এখন ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। রূপসায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোবাইল সার্ভিসিং কর্মী নূর আলম খান মারা যান ২১ এপ্রিল। বুধবার তার পরিবারের সদস্যদের নমুনা পরীক্ষা করলে দুই ছেলে ফাহিম (১৪) ও মাহিমের (৩) করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
নূর আলম খুলনায় কাজ করলেও তিনি সম্প্রতি মাদারীপুর থেকে এখানে আসেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
এর আগে ১৮ এপ্রিল খুলনা মেডিকেল কলেজের গেস্ট হাউজে থাকা ইউরোলজি বিভাগের এক সহকারী অধ্যাপক করোনা আক্রান্ত হন। পরে অন্য চিকিৎসকদের নমুনা পরীক্ষা করা হলে গত ১০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা কলেজের আরও দুই শিক্ষকের করোনা শনাক্ত হয়।
অভিযোগ রয়েছে, বহিরাগতদের মাধ্যমে খুলনা বিভাগের গ্রামগঞ্জে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। গত ১০ দিনের ব্যবধানে বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ২৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন একজন। এর ফলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, খুলনা জেলায় ৭, যশোরে ৫, চুয়াডাঙ্গায় ১, নড়াইলে ৬, বাগেরহাটে ১, মেহেরপুরে ১, কুষ্টিয়ায় ২ ও মাগুরায় ১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, আক্রান্তদের অধিকাংশই বাইরে থেকে এসেছেন। খুলনায় যিনি মারা গেছেন তিনি মাদারীপুর থেকে এসেছিলেন। এ কারণে সংক্রমণ কমাতে এখন নিজ বাড়িতেও অধিক সচেতনতা ও ব্যক্তিগত দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় খুলনা ও যশোরে এরই মধ্যে দুটি পিসিআর মেশিনে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এছাড়া আগামী ২৫ এপ্রিল কুষ্টিয়ায় আরও একটি পিসিআর মেশিন চালু করা হচ্ছে। পাশাপাশি জরুরি চিকিৎসার জন্য খুলনা ও সাতক্ষীরায় ১৮টি ভেন্টিলেটরসহ আইসিইউ বেড ও জেলা-উপজেলায় ১,১৩৪টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
খুলনা জেলা সিভিল সার্জন অফিস জানায়, বিদেশ ফেরত ও অন্য জেলা থেকে আগত প্রায় ২ হাজার ১৩০ জনকে প্রাথমিক অবস্থায় কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। খুলনা বিভাগে এ সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এদের মধ্যে অধিকাংশ ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষ করলেও নতুন করে অন্য জেলা থেকে আসা ব্যক্তিরা ঝুঁকি তৈরি করছেন।
খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, হঠাৎ করে অন্য জেলা থেকে আগতদের কারণে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এ কারণে যারা অন্য জেলা থেকে আসছেন তাদের নজরদারিতে নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সংক্রমণ প্রতিরোধে ‘ডোন্ট মুভ’ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অন্য জেলা থেকে কেউ আসতে পারবেন না, আবার এখানকার কেউ অন্য জেলায় যাতায়াত করতে পারবেন না।