ঢাকা ০৬:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দিনাজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু ইবনে রজব ও ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির আহমেদ সুজন গ্রেফতার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৬:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০ ২৮ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) জোড়া খুনের মামলাসহ অন্য আরো কয়েকটি সুনির্দিষ্ট মামলায় দিনাজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু ইবনে রজবকে ও অন্য কয়েকটি মামলার আসামি ছাত্রলীগ দিনাজপুর সরকারি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সুজনকে গ্রেফতার করেছে দিনাজপুর কোতয়ালি থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার(১১ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজার এলাকা থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে আবু ইবনে রজবের মালিকাধীন আবাসিক হোটেল “আফিয়া ইন্টারন্যাশনাল” থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

এর পর আনুমানিক দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে বিপুলসংখ্যক পুলিশের একটি দল ঘন্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে শহরের সুইহারী এলাকার নিজ বাড়ি থেকে দিনাজপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সুজনকে গ্রেফতার করে।

আটকের পরপরই কোতয়ালি থানায় দুই আসামিকে নিয়ে আসা হলে তাদের সমর্থকরা মুক্তির দাবিতে থানা ঘেরাও করে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদেরকে থানার সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় পুরো শহরজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

আটকের পর বিকেল ৫টায় পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় কোতয়ালি থানা থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি রজব ও ছাত্রলীগ নেতা সুজনকে দিনাজপুর আদালকে পাঠানো হয়। আদালত থেকে বিকেল সাড়ে ৫টায় তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুজন সরকার জানান, আবু ইবনে রজবের বিরুদ্ধে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) জোড়া খুনের একটি মামলার শেষে পুলিশের সিআইডি বিভাগ (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন বিভাগ) আবু ইবনে রজবের ব্যাপারে আমাদের অবহিত করলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করি। তাছাড়া আবু ইবনে রজবের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় ডাকাতির চেষ্টার দুইট মামলা, বোচাগঞ্জ থানায় একটি খুনের মামলা ও অন্য বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এসব মামলার ভিত্তিতেই আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি।

তিনি আরো জানান, সাব্বির আহমেদ সুজনের বিরুদ্ধে লিচু বাগানকে কেন্দ্র করে একটি মামলাসহ আরো কয়েকটি মামলা রয়েছে। এসব মামলার ভিত্তিতেই আমরা তাকেও গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছি। পরে আদালত থেকে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

উল্লেখ্য, হাবিপ্রবি’র তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষের নেতাকর্মীরা। ২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিল আন্দোলনরত অবস্থায় ভেটেরিনারি অনুষদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশের নেতারা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফতেখারুল ইসলাম রিয়েল ও সাধারণ সম্পাদক অরুণ কান্তি রায় গ্রুপের ওপর হামলা চালায়। এতে বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জাকারিয়া ও কৃষি বিভাগের ছাত্র মাহমুদুল হাসান মিল্টন নিহত হন। এই খুনের ঘটনায় পরিবারের করা পৃথক দু’টি মামলায় ৪১ জনকে আসামি করা হয়। নিহত মিল্টনের চাচা মকসুদার রহমান বাদী হয়ে ৩৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ওই মামলার এক নম্বর আসামি করা হয় তখনকার উপাচার্য রুহুল আমিনকে।

অন্য দিকে নিহত জাকারিয়ার পিতা গোলাম মোস্তফা একই বছর দিনাজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু ইবনে রজবকে এক নম্বর আসামি করে এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চনসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দিনাজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু ইবনে রজব ও ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির আহমেদ সুজন গ্রেফতার

আপডেট সময় : ০৪:৫৬:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) জোড়া খুনের মামলাসহ অন্য আরো কয়েকটি সুনির্দিষ্ট মামলায় দিনাজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু ইবনে রজবকে ও অন্য কয়েকটি মামলার আসামি ছাত্রলীগ দিনাজপুর সরকারি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সুজনকে গ্রেফতার করেছে দিনাজপুর কোতয়ালি থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার(১১ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজার এলাকা থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে আবু ইবনে রজবের মালিকাধীন আবাসিক হোটেল “আফিয়া ইন্টারন্যাশনাল” থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

এর পর আনুমানিক দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে বিপুলসংখ্যক পুলিশের একটি দল ঘন্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে শহরের সুইহারী এলাকার নিজ বাড়ি থেকে দিনাজপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সুজনকে গ্রেফতার করে।

আটকের পরপরই কোতয়ালি থানায় দুই আসামিকে নিয়ে আসা হলে তাদের সমর্থকরা মুক্তির দাবিতে থানা ঘেরাও করে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদেরকে থানার সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় পুরো শহরজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

আটকের পর বিকেল ৫টায় পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় কোতয়ালি থানা থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি রজব ও ছাত্রলীগ নেতা সুজনকে দিনাজপুর আদালকে পাঠানো হয়। আদালত থেকে বিকেল সাড়ে ৫টায় তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুজন সরকার জানান, আবু ইবনে রজবের বিরুদ্ধে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) জোড়া খুনের একটি মামলার শেষে পুলিশের সিআইডি বিভাগ (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন বিভাগ) আবু ইবনে রজবের ব্যাপারে আমাদের অবহিত করলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করি। তাছাড়া আবু ইবনে রজবের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় ডাকাতির চেষ্টার দুইট মামলা, বোচাগঞ্জ থানায় একটি খুনের মামলা ও অন্য বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এসব মামলার ভিত্তিতেই আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি।

তিনি আরো জানান, সাব্বির আহমেদ সুজনের বিরুদ্ধে লিচু বাগানকে কেন্দ্র করে একটি মামলাসহ আরো কয়েকটি মামলা রয়েছে। এসব মামলার ভিত্তিতেই আমরা তাকেও গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছি। পরে আদালত থেকে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

উল্লেখ্য, হাবিপ্রবি’র তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষের নেতাকর্মীরা। ২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিল আন্দোলনরত অবস্থায় ভেটেরিনারি অনুষদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশের নেতারা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফতেখারুল ইসলাম রিয়েল ও সাধারণ সম্পাদক অরুণ কান্তি রায় গ্রুপের ওপর হামলা চালায়। এতে বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জাকারিয়া ও কৃষি বিভাগের ছাত্র মাহমুদুল হাসান মিল্টন নিহত হন। এই খুনের ঘটনায় পরিবারের করা পৃথক দু’টি মামলায় ৪১ জনকে আসামি করা হয়। নিহত মিল্টনের চাচা মকসুদার রহমান বাদী হয়ে ৩৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ওই মামলার এক নম্বর আসামি করা হয় তখনকার উপাচার্য রুহুল আমিনকে।

অন্য দিকে নিহত জাকারিয়ার পিতা গোলাম মোস্তফা একই বছর দিনাজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু ইবনে রজবকে এক নম্বর আসামি করে এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চনসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেছিলেন।