ঢাকা ১০:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ১১ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

শীতের চাঁদরে ঢাকা উত্তরাঞ্চল শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:২৮:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩ ৪০৪ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সুুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা)প্রতিনিধিঃ সারাদিন না খেয়ে যদি এভাবে শুধু আগুন পোহাতে পারতাম, আহা কী মজা না হতো। সকাল ও সন্ধায় আগুনের ওপর হাত রেখে শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে এ কথা বলনে একজন মধ্যবয়সী জবেদ আলী। উত্তরের গ্রামাঞ্চলে সকাল আর সন্ধ্যার অতি সাধারণ দৃশ্য এটি। কেউ খড়ের মধ্যে, কেউ শুকনা লাকড়ি বা কাগজের মধ্যে আবার কেউ কেউ কাগজের কোনো কার্টনের মধ্যে আগুন ধরিয়ে চারপাশে ৩-৫ জন মিলে আগুন পোহাতে বসে গেছেন। দাঁড়িয়ে কিংবা বসে, যে যেভাবে পারছেন আগুনের তাপ পোহাচ্ছেন। শৈত্যপ্রবাহে নাজেহাল অবস্থা সবার। হাড়কাঁপানো ঠান্ডা সবাই জবুথবু- শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার একই হাল। শীত থেকে বাঁচার সাধ্য কারও নেই। অনেকের কাছে শীতের কনকনে ঠান্ডা পানি আর বাঘের সাক্ষাৎ একই কথা। তাই শীতের মধ্যে অনেকেই দেখা যায় একাধারে কয়েকদিন গোসল না করেই কাটিয়ে দিচ্ছে। পশু-পাখি গুলোরও শীতের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচে।

উত্তরের জেলা গাইবান্ধার সুুন্দরগঞ্জ উপজেলায় শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার চেষ্টায় বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টার দিকে উপজেলার মীরগঞ্জ বাজারে পরিবারের জীবিকা নির্বাহের জন্য বাজারে এসে কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মিলে শুকনা লাকড়ি বা কাগজের টুকরো দিয়ে আগুন পোহাতে বসে গেছেন। এছাড়াও চোঁখে পড়ে যায় অনেক কে গোসল করার জন্য মাটির চুলায় একটি হাঁড়িতে পানি গরম করিতেছে। হঠাৎ দেখলাম কয়েকটি মুরগির বাচ্চাও চুলার কাছে এসে আগুনের তাপ গ্রহণ করছে সানন্দে। এতে সহজেই অনুধাবন করলাম শীতের সকালে হিমেল হাওয়ার শক্তি কত তীব্র। উত্তরাঞ্চলের শীতের তীব্রতা, বিশেষ করে সুন্দরগঞ্জে গত কয়েকদিন থেকে ছিল সকালে ও দুপুর শেষের দিকে দেখা যায় কোথাও আবার দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলেও দেখা মেলে না সূর্যের। ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে সারা বেলা। এই প্রচন্ড শীতে সব বয়সের মানুষের জন্যই ভয়ের কারণ। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি। শিশুদের অতিরিক্ত ঠান্ডায় নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কায় থাকেন।

এছাড়াও শীত থেকে বাঁচার জন্য আগুন পোহাতে গিয়ে অনেক সময় অসচেতনতার কারণে অনেকের জীবন পর্যন্ত চলে যায়। বিগত প্রায় সব বছরেই শীতের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে অনেকেই। এক্ষেত্রে নারীরাই বিপদে পড়ে থাকে বেশি। গ্রামাঞ্চলের মা-বোনেরা শাড়ি পরে থাকে সব সময়। হাড়কাঁপানো শীত সহ্য করতে না পেরে বাড়ির পাশেই খড়ের মধ্যে আগুন ধরিয়ে তাপ নেয়ার সময় কখন যে শাড়ির আঁচলে আগুন লেগে যায়, তা শীতের তীব্রতার কারণে বোঝা যায় না। কাজেই সামান্য সচেতনতার অভাবে চলে যেতে পারে একটি তরতাজা প্রাণ, যা আমাদের কারও কাম্য নয়। আবার অনেক সময় গ্রামে এমনও হয়েছে যে, শীতের মধ্যে এলাকার ছেলেরা কয়েকজন মিলে কৃষকের খড়ের পুঞ্জির পাশে আগুন পোহাতে গিয়ে সেই খড়ের পুঞ্জি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কৃষকের জন্য এ ক্ষতি অপূরণীয়। সুতরাং শীত থেকে বাঁচতে গিয়ে কারও যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে সবার দৃষ্টি থাকা প্রয়োজন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শীতের চাঁদরে ঢাকা উত্তরাঞ্চল শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার চেষ্টা

আপডেট সময় : ০৪:২৮:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩

সুুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা)প্রতিনিধিঃ সারাদিন না খেয়ে যদি এভাবে শুধু আগুন পোহাতে পারতাম, আহা কী মজা না হতো। সকাল ও সন্ধায় আগুনের ওপর হাত রেখে শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে এ কথা বলনে একজন মধ্যবয়সী জবেদ আলী। উত্তরের গ্রামাঞ্চলে সকাল আর সন্ধ্যার অতি সাধারণ দৃশ্য এটি। কেউ খড়ের মধ্যে, কেউ শুকনা লাকড়ি বা কাগজের মধ্যে আবার কেউ কেউ কাগজের কোনো কার্টনের মধ্যে আগুন ধরিয়ে চারপাশে ৩-৫ জন মিলে আগুন পোহাতে বসে গেছেন। দাঁড়িয়ে কিংবা বসে, যে যেভাবে পারছেন আগুনের তাপ পোহাচ্ছেন। শৈত্যপ্রবাহে নাজেহাল অবস্থা সবার। হাড়কাঁপানো ঠান্ডা সবাই জবুথবু- শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার একই হাল। শীত থেকে বাঁচার সাধ্য কারও নেই। অনেকের কাছে শীতের কনকনে ঠান্ডা পানি আর বাঘের সাক্ষাৎ একই কথা। তাই শীতের মধ্যে অনেকেই দেখা যায় একাধারে কয়েকদিন গোসল না করেই কাটিয়ে দিচ্ছে। পশু-পাখি গুলোরও শীতের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচে।

উত্তরের জেলা গাইবান্ধার সুুন্দরগঞ্জ উপজেলায় শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার চেষ্টায় বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টার দিকে উপজেলার মীরগঞ্জ বাজারে পরিবারের জীবিকা নির্বাহের জন্য বাজারে এসে কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মিলে শুকনা লাকড়ি বা কাগজের টুকরো দিয়ে আগুন পোহাতে বসে গেছেন। এছাড়াও চোঁখে পড়ে যায় অনেক কে গোসল করার জন্য মাটির চুলায় একটি হাঁড়িতে পানি গরম করিতেছে। হঠাৎ দেখলাম কয়েকটি মুরগির বাচ্চাও চুলার কাছে এসে আগুনের তাপ গ্রহণ করছে সানন্দে। এতে সহজেই অনুধাবন করলাম শীতের সকালে হিমেল হাওয়ার শক্তি কত তীব্র। উত্তরাঞ্চলের শীতের তীব্রতা, বিশেষ করে সুন্দরগঞ্জে গত কয়েকদিন থেকে ছিল সকালে ও দুপুর শেষের দিকে দেখা যায় কোথাও আবার দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলেও দেখা মেলে না সূর্যের। ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে সারা বেলা। এই প্রচন্ড শীতে সব বয়সের মানুষের জন্যই ভয়ের কারণ। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি। শিশুদের অতিরিক্ত ঠান্ডায় নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কায় থাকেন।

এছাড়াও শীত থেকে বাঁচার জন্য আগুন পোহাতে গিয়ে অনেক সময় অসচেতনতার কারণে অনেকের জীবন পর্যন্ত চলে যায়। বিগত প্রায় সব বছরেই শীতের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে অনেকেই। এক্ষেত্রে নারীরাই বিপদে পড়ে থাকে বেশি। গ্রামাঞ্চলের মা-বোনেরা শাড়ি পরে থাকে সব সময়। হাড়কাঁপানো শীত সহ্য করতে না পেরে বাড়ির পাশেই খড়ের মধ্যে আগুন ধরিয়ে তাপ নেয়ার সময় কখন যে শাড়ির আঁচলে আগুন লেগে যায়, তা শীতের তীব্রতার কারণে বোঝা যায় না। কাজেই সামান্য সচেতনতার অভাবে চলে যেতে পারে একটি তরতাজা প্রাণ, যা আমাদের কারও কাম্য নয়। আবার অনেক সময় গ্রামে এমনও হয়েছে যে, শীতের মধ্যে এলাকার ছেলেরা কয়েকজন মিলে কৃষকের খড়ের পুঞ্জির পাশে আগুন পোহাতে গিয়ে সেই খড়ের পুঞ্জি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কৃষকের জন্য এ ক্ষতি অপূরণীয়। সুতরাং শীত থেকে বাঁচতে গিয়ে কারও যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে সবার দৃষ্টি থাকা প্রয়োজন।