ঢাকা ১০:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ১১ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

হলুদ ফুলে ছুয়েছে মাঠ সুন্দরগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় কৃষক

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:২২:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩ ২৪০ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সুুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা)প্রতিনিধিঃ প্রকৃতিজুড়ে বইছে এখন শীতের হাওয়া। আর এই শীতের হাওয়ার মধ্যে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে বিস্তৃত এলাকা। এমন চোখ জুড়ানো হলুদের মেলা প্রকৃতিকে সাজিয়েছে অপরূপ সাজে। এক ফুল থেকে আরেক ফুলে গুন গুন করে মধু আহরণে ভিড় করছে মৌমাছিরা।

গাইবান্ধার সুুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ক্ষেতের পর ক্ষেতে সরিষা ফুলের এমনই নয়নাভিরাম দৃশ্যের দেখা মিলবে। সেইসঙ্গে কৃষকরাও এবার ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন। যদি প্রকৃতি বিরূপ আচরণ না করে তাহলে এবার তাদের বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, সুুন্দরগঞ্জ উপজেলার এবার লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি সরিষা চাষ হচ্ছে। গত বছর থেকে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তেলজাতীয় ফসল উৎপাদনে বেশ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। সেই কারণে এবার সরিষার চাষ বাড়িয়েছেন কৃষকরা।

বেলকা ইউনিয়নের কিশামত সদর এলাকার কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, গতবছর অল্প কিছু জমিতে সরিষার চাষ করেছিলাম। এবার প্রায় তিন বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। সেইসঙ্গে এবার ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো খারাপ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যদি এরকম থাকে তাহলে এবার বাম্পার ফলন হবে। নজরুল ইসলাম নজু নামে এক কৃষক বলেন, আমি আট বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত ভালো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে এবার অনেক লাভবান হতে পারবো। বলা যায়, এ বছর বাম্পার ফলন হবে সরিষার। এবছর সঠিক সময় উপজেলা কৃষি অফিসে সরকার থেকে বীজ দিয়েছে, যে কারণে অনেকেই সরিষার চাষ করেছেন। তারাপুর ইউনিয়নের গাবের তল নামক স্থানের আরেক কৃষক চাঁন মিয়া বলেন, কম সময়ের মধ্যেই সরিষা ঘরে তোলা যায়। সেইসঙ্গে খরচও তেমন হয় না। এবার মেঘ বৃষ্টি থেকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে ফলন অনেক বেশি হবে, যা অন্য কোনো বছর হয়নি।

 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি উপসহকারি কর্মকতা এস এম সরওয়ার হোসেন বলেন, সরিষা চাষের আগেই মাঠ পর্যায়ে গিয়ে সঠিক ভাবে বীজ রোপনের নিয়মসহ সরিষা চাষে পরিচর্যার করার প্রশিক্ষণ দিয়েছি কৃষকদের তারা সেটা ফলো করতেছে।

 

উপজেলা কৃষি অফিসার রাশিদুল কবির বলেন, গত বছর উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির টার্গেট ছিল। এবছর সেটা বাড়িয়ে ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করার টার্গেট করা হয়েছে। মাঠের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে টার্গেটের চেয়েও বেশি পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আবহাওয়ার পরিস্থিতি যেমন আছে, পরেও এরকম থাকলে সরিষার বাম্পার ফলন হবে। এবারও আমরা বিনামূল্যে কৃষকদের বীজ ও সার দিয়েছি। যার কারণে অনেক কৃষক সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছে। এবার উপজেলায় প্রায় ২ হাজার টন সরিষা উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া তিনি আরও বলেন তেলজাতীয় ফসল উৎপাদনে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। সরিষা থেকে সহজেই তেল বের করা যায়। বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষে ৮০ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যেই ফসল ঘরে তোলা যায়। তাই বারি-১৪ সরিষা চাষ করে সারাদেশের ন্যায় সুন্দরগঞ্জের কৃষকরা আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। সরিষার দামও আগের থেকে বেড়ে গিয়েছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

হলুদ ফুলে ছুয়েছে মাঠ সুন্দরগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় কৃষক

আপডেট সময় : ০৪:২২:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩

সুুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা)প্রতিনিধিঃ প্রকৃতিজুড়ে বইছে এখন শীতের হাওয়া। আর এই শীতের হাওয়ার মধ্যে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে বিস্তৃত এলাকা। এমন চোখ জুড়ানো হলুদের মেলা প্রকৃতিকে সাজিয়েছে অপরূপ সাজে। এক ফুল থেকে আরেক ফুলে গুন গুন করে মধু আহরণে ভিড় করছে মৌমাছিরা।

গাইবান্ধার সুুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ক্ষেতের পর ক্ষেতে সরিষা ফুলের এমনই নয়নাভিরাম দৃশ্যের দেখা মিলবে। সেইসঙ্গে কৃষকরাও এবার ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন। যদি প্রকৃতি বিরূপ আচরণ না করে তাহলে এবার তাদের বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, সুুন্দরগঞ্জ উপজেলার এবার লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি সরিষা চাষ হচ্ছে। গত বছর থেকে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তেলজাতীয় ফসল উৎপাদনে বেশ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। সেই কারণে এবার সরিষার চাষ বাড়িয়েছেন কৃষকরা।

বেলকা ইউনিয়নের কিশামত সদর এলাকার কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, গতবছর অল্প কিছু জমিতে সরিষার চাষ করেছিলাম। এবার প্রায় তিন বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। সেইসঙ্গে এবার ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো খারাপ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যদি এরকম থাকে তাহলে এবার বাম্পার ফলন হবে। নজরুল ইসলাম নজু নামে এক কৃষক বলেন, আমি আট বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত ভালো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে এবার অনেক লাভবান হতে পারবো। বলা যায়, এ বছর বাম্পার ফলন হবে সরিষার। এবছর সঠিক সময় উপজেলা কৃষি অফিসে সরকার থেকে বীজ দিয়েছে, যে কারণে অনেকেই সরিষার চাষ করেছেন। তারাপুর ইউনিয়নের গাবের তল নামক স্থানের আরেক কৃষক চাঁন মিয়া বলেন, কম সময়ের মধ্যেই সরিষা ঘরে তোলা যায়। সেইসঙ্গে খরচও তেমন হয় না। এবার মেঘ বৃষ্টি থেকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে ফলন অনেক বেশি হবে, যা অন্য কোনো বছর হয়নি।

 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি উপসহকারি কর্মকতা এস এম সরওয়ার হোসেন বলেন, সরিষা চাষের আগেই মাঠ পর্যায়ে গিয়ে সঠিক ভাবে বীজ রোপনের নিয়মসহ সরিষা চাষে পরিচর্যার করার প্রশিক্ষণ দিয়েছি কৃষকদের তারা সেটা ফলো করতেছে।

 

উপজেলা কৃষি অফিসার রাশিদুল কবির বলেন, গত বছর উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির টার্গেট ছিল। এবছর সেটা বাড়িয়ে ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করার টার্গেট করা হয়েছে। মাঠের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে টার্গেটের চেয়েও বেশি পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আবহাওয়ার পরিস্থিতি যেমন আছে, পরেও এরকম থাকলে সরিষার বাম্পার ফলন হবে। এবারও আমরা বিনামূল্যে কৃষকদের বীজ ও সার দিয়েছি। যার কারণে অনেক কৃষক সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছে। এবার উপজেলায় প্রায় ২ হাজার টন সরিষা উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া তিনি আরও বলেন তেলজাতীয় ফসল উৎপাদনে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। সরিষা থেকে সহজেই তেল বের করা যায়। বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষে ৮০ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যেই ফসল ঘরে তোলা যায়। তাই বারি-১৪ সরিষা চাষ করে সারাদেশের ন্যায় সুন্দরগঞ্জের কৃষকরা আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। সরিষার দামও আগের থেকে বেড়ে গিয়েছে।